গণিতে দশমিক সংখ্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা আমাদের দৈনন্দিন বিভিন্ন ধরণের হিসাবের ক্ষেত্রে দশমিক সংখ্যা ব্যবহার করি। তবে আমরা অনেকেই দশমিক সংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানবো দশমিক সংখ্যা কাকে বলে। এ ছাড়াও দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত স্পস্ট ধারণা প্রদান করার চেষ্টা করব।
দশমিক সংখ্যা কাকে বলে

দশমিক সংখ্যার মধ্যে দশমিক বিন্দু থাকে যা কে ইংরেজিতে ( Decimal Point) বলা হয়। মূলত দশমিক সংখ্যার মধ্যে এই দশমিক বিন্দুর মাধ্যমে পূর্ণ সংখ্যা ও ভগ্নাংশ কে পৃথক করতে পারি। মূলত দশমিক সংখ্যা এমন এক ধরণের সংখ্যা পদ্ধতি যেখানে ১০ ভিত্তিক মানের উপর সংখ্যা গুলোকে প্রকাশ করা হয়। এই পদ্ধতি অনুযায়ী ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যার মান ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ ছাড়া বুঝা কিছুটা কস্টসাধ্য তাই আমরা একটি উদাহরণ এর মাধ্যমে আপনাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি মনে করুন একটা সংখ্যা – ৪৫ . ৬৭
উক্ত সংখ্যার দশমিক মান সংখ্যার স্থান অনুযায়ী যদি বের করি তাহলে আমরা পাই –
- এখানে ৪ সংখ্যাটি রয়েছে দশকের স্থানে তাই ৪ এর মান হবে – ৪ X ১০ = ৪০
- পরের সংখ্যা ৫ আছে এককের স্থানে তাই ৫ এর মান হবে – ৫ X ১ = ৫
- পরের সংখ্যা ৬ রয়েছে দশমিকের পরে অর্থ্যাৎ দশমাংশের স্থানে তাই ৬ এর মান হলো – ৬ X (১/১০) = ০.৬।
- পরের সংখ্যা ৭ রয়েছে শতাংশের স্থানে তাই ৭ এর মান হলো – ৭ X (১/১০০) = ০.০৭
মনে রাখতে হবে দশমিক সংখ্যার প্রতিটি অংকের মান নির্ভর করে সংখ্যাটির অবস্থানের উপর নির্ভর করে। এখন উক্ত সংখ্যা গুলো কে যদি যোগ করি তবে আমরা পাই –
৪০ + ৫ + ০.৬ + ০.০৭ = ৪৫.৬৭।
আশা করি আপনারা দশকিম সংখ্যা কাকে বলে বিস্তারিত ভাবে খুব সহজে বুঝতে পেরেছেন। যদি বুঝতে সমস্যা থাকে তবে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি কি

দশমিক সংখ্যা কাকে বলে আমরা ইতিমধ্যেই বিস্তারিত উপরে আলোচনা করেছি। দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি যেভাবে কাজ করে সেটা জানা আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পূর্বেই বলেচি দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি মূলত ১০ ভিত্তিক মানে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে এই ধরণের সংখ্যা পদ্ধতি কে ব্যবহার করে থাকি। দশমিক সংখ্যা মূলত ০৩ টি বৈশিষ্টের উপরে কাজ করে থাকে। যেগুলো হলো –
- ভিত্তি
- স্থানের মান
- দশমিক বিন্দু
১. ভিত্তি কি
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির মূল ভিত্তি হলো ১০। এখানে ১০ দ্বারা ১০ টি সংখ্যার ব্যবহার কে নির্দেষ করে যেমন – ০, ১, ২ , ৩, ৪ ,৫ ,৬ , ৭ ,৮, ৯।
২. স্থানের মান কি
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রতিটি অংকের মান তার অবস্থানের উপর নির্ভর করে বৃদ্ধি পায়। প্রতিটি সংখ্যার অবস্থান হতে ডান দিক থেকে বামে প্রতিটি অংকে ১০ গুন করে বৃদ্ধি পায়। যেমন –
- ১০ একক এর স্থানের মান ১০ X ০ = ১০।
- ১০ দশকের স্থানের মান ১০ X ১ = ১০।
- ১০ শতকের স্থানের মান ১০ X ১০ = ১০০
- ১০ হাজারের স্থানের মান ১০ X ১০ X ১০ = ১০০০
ঠিক এভাবেই সংখ্যার অবস্থান অনুযায়ী মান পরিবর্তন হতে থাকে।
৩. দশমিক বিন্দু কি
দশমিক সংখ্যা প্রকাশের ক্ষেত্রে দশমিক বিন্দু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দশমিক বিন্দুর মাধ্যমে ভগ্নাংশ ও পূর্ণ সংখ্যা কে আলাদা করা হয়। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রথম দেয়া উদাহরণ টি ভালো ভাবে খেয়াল করতে হবে –
আমরা একটা সংখ্যা নিলাম যা – ৪৫. ৬৭ যা দশমিকে প্রকাশ করলে ফলাফল ঠিক এমন দেখাবে,
- এখানে ৪ সংখ্যাটি রয়েছে দশকের স্থানে তাই ৪ এর মান হবে – ৪ X ১০ = ৪০
- পরের সংখ্যা ৫ আছে এককের স্থানে তাই ৫ এর মান হবে – ৫ X ১ = ৫
- পরের সংখ্যা ৬ রয়েছে দশমিকের পরে অর্থ্যাৎ দশমাংশের স্থানে তাই ৬ এর মান হলো – ৬ X (১/১০) = ০.৬।
- পরের সংখ্যা ৭ রয়েছে শতাংশের স্থানে তাই ৭ এর মান হলো – ৭ X (১/১০০) = ০.০৭
আরো পড়ুন:
দশমিক সংখ্যা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর
দশমিক সংখ্যা কাকে বলে?
দশমিক সংখ্যা গনিতের এমন এক পদ্ধতি যেখানে সংখ্যা কে ১০ ভিত্তিক মানে উপর প্রকাশ করা হয়।
সংখ্যা পদ্ধতির উৎপত্তি কোথায়?
সংখ্যা পদ্ধতি প্রথমে প্রাচীন ভারতবর্ষে প্রকাশিত হয়।
দশমিক সংখ্যা সম্পর্কে আমাদের মতামত
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে বিশ্বে সবার প্রথম প্রাচীন ভারবর্ষে আলোচনা এবং ১০ ভিত্তিক সংখ্যার প্রচলন শুরু হয়। যা সময়ের পরিক্রমায় গনিতের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট হিসেবে যুক্ত হয়ে যায়। সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে আপনার আরো কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন, আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ