গনিতের চারটি ক্রিয়ার মধ্যে গুণ হলো একটি প্রক্রিয়া। সাধারণত এই ধরণের প্রক্রিয়ায় একাধিক সংখ্যাগুলো ক্রমান্বয়ে যোগ করা হয়। গুণ এর মূলত ০৩ টি অংশ রয়েছে। যেগুলো হলো – গুন্য, গুনিতক ও গুণফল।
আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানবো গুণ কাকে বলে ও গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া সম্পর্কে। যদি আপনি গুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তবে আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
গুণ কাকে বলে
প্রথমেই চলুন গুণ কাকে বলে এটা খুব ভালোভাবে জেনে নেই। কোনো সংখ্যা দ্বারা অন্য একটি সংখার ক্রমান্বয় যোগফল বের করার সংক্ষিপ্ত মাধ্যম কে গুণ বলা হয়। যদি আরো সহজ করে বলি – একাধিক সংখ্যার যোগফল বের করার মাধ্যম হলো গুণ। যেমন –
আমরা যদি 3 X 4 = 12 বের করি গুণের মাধ্যমে খুব সহজেই। তবে যদি একাধিক সংখ্যার যোগফল হিসাব করি তবে একই ফলাফল আসবে, যেমন –
(3 X 4)
এখানে, ৩ কে চারবার যোগ করা বুঝায়।
3 + 3 + 3 + 3 = 12.
কিন্তু একই ফলাফল আমরা গুণনিয়ক এর মধ্যমে খুব সহজে বের করে নিতে পারি। মূলত এই পদ্ধতিকে বলা হয় গুণ। আশা করি গুণ কাকে বলে এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত ধারণা পেয়েছেন।
গুণ কত প্রকার ও কি কি
গনিতে গুণ সাধারণত অনেক ধরণের হয়ে থাকে। এটা নির্ভর করে গনিতের সমস্যা অনুযায়ী। অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন গানিতিক সমস্যা সমাধান করার জন্য সাধারণ গুণ ব্যবহার করা হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ গুণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা যায় না। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায় গুণ গুলো করতে হয়। নিচে আমরা কয়েকটি গুণের প্রকার সম্পর্কে লিখে দিলাম –
১. সাধারণ গুণ
সাধারণ গানিতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সাধারণ গুণ করা হয়। উদাহরণ –
2 x 3 = 12
গনিতে গুণের প্রাথমিক ধারণা হলো সাধারণ গুণ।
২. ভগ্নাংশের গুণ
ভগ্নাংশের গুণ সমাধানের ক্ষেত্রে লব এর সাথে লব ও হরের সাথে হরের গুণ করে ফলাফল বের করা হয়। উদাহরণ –
৩. অনুক্রমিক গুণ
এই পদ্ধতিতে একটি অনুক্রমের গুণফল বের করা হয়। উদাহরণ –
1 X 2 X 3 X 4 = 24
এখানে, প্রথমে ৩ X 4 = 12, এরপর ফলালফল কে ২ দ্বারা গুণ করে ২৪ পাওয়া যায়।
৪. বহুপদী গুণ
এই ধরণের গুণ কে প্রতিটি পদ কে বহুপদী পদের সাথে গুণ করা হয়। উদাহরণ –
৫. বীজগানিতিক গুণ
বীজগানিতিক গুণের ক্ষেত্রে চলরাশি ও সহগ কে গুণ করা হয়। উদাহরণ –
৬. দশমিক গুণ
দশমিক গুণের ক্ষেত্রে প্রথমে সংখ্যাগুলো কে পূর্ণ সংখ্যার মত করতে হবে এরপর বাকি অংকগুলোর যোগফল ব্যবহার করে দশমিক ব্যবহার করতে হবে। যেমন –
এখানে, দশমিকের পরের সংখ্যাগুলো কে গুণ করে প্রাপ্ত ফলাফল ১০ পাওয়ার পর, গুণের ধারায় দশমিকের আগে সংখ্যা না থাকে ফলাফলের পূর্বে ০ বসেছে।
গনিতে এমন অনেক ভাবে গুণ করা হয়। মূলত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে গুণের প্রকার ও ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ সমস্যা থেকে শুরু করে গনিতের জটিল সব সমস্যার সমাধান করার জন্য বিভিন্ন রুপে গুণ কে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
গুণের মূল অংশ কয়টি ও কি কি
গুণের ক্ষেত্রে মূল অংশ মূলত ০৩ টি। এই অংশ গুলো কে ব্যবহার করে গুণ সম্পন্ন করা হয়। যেগুলো হলো –
- গুন্য – যে সংখ্যা দিয়ে গুণ করা হয় তাকে গুন্য বলা হয়। যেমন – 100 X 2 = 200 এখানে গুন্য মুলত 100 সংখ্যাটি.
- গুণক – যে সংখ্যা দ্বারা গুণ সম্পন্ন করা হয় তাকে গুণক বলা হয়। যেমন – 100 X 2 = 200 এখানে, ২ সংখ্যাটি দ্বারা গুণ করা হয়েছে। তাই গুণক হলো এখানে ২।
- গুণফল – গুন্য ও গুণক এর মাধ্যমে গুণ সম্পন্ন করার পর প্রাপ্ত ফলাফল কে গুণফল বলা হয়। যেমন – 100 X 2 = 200 এখানে ২০০ সংখ্যাটি হলো গুণফল।
গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া কি
আমরা অনেকেই হয়ত জানিনা গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া সম্পর্কে। সাধারণত গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া কে বলা হয় ভাগ। গুণ ও ভাগ কে বলা হয় বিপরীত গানিতিক প্রক্রিয়া। গুণ করার মাধ্যমে দুটি সংখ্যা কে আমরা গুণফল বের করতে পারি তবে ভাগের মাধ্যমে গুণফল এর মধ্য থেকে সংখ্যা গুলো কে নির্ধারণ করি।
উদাহরণ –
গুণ করার মাধ্যমে আমরা প্রাপ্ত ফলাফল বের করতে পারি যথা –
3 X 4 = 12
এখানে, ৩ হলো গুণ্য এবং ৪ হলো গুণক, ১২ হচ্ছে আমাদের সংখ্যা দুটির গুণফল।
ভাগ করার মাধ্যমে আমরা গুণফল কে আলাদা করতে পারি যথা –
12÷3=4
এখানে, ১২ হলো ভাজ্য, ৩ হলো ভাজক এবং ৪ হলো ভাগফল।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া কে বলা হয় ভাগ।
📌 আরো পড়ুন 👇
গুণ সম্পর্কে আমাদের মতামত
আমাদের আজকের পোস্টে আমরা জানলাম গুণ কাকে বলে ও গুণের বিপরীত প্রক্রিয়া কে কি বলে সেতা সম্পর্কে। গনিতের আরো অনেক বিষয় রয়েছে। যদি আপনাদের আরো কোনো বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার ইচ্ছা থাকে তবে আমাদের কমেন্টে জানিয়ে দিতে পারেন, আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।